বাংলাদেশ ও ইন্দোনেশিয়ার মধ্যে প্রতিরক্ষা সহযোগিতা নতুন মোড় নিতে যাচ্ছে—এমন বার্তা মিলেছে মঙ্গলবার সেনাসদরে অনুষ্ঠিত এক গুরুত্বপূর্ণ সাক্ষাতে।
বাংলাদেশ সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান এবং ইন্দোনেশিয়ার পররাষ্ট্র উপমন্ত্রী আরামানথা ক্রিস্টিয়ান নাসির এর মধ্যে অনুষ্ঠিত এই সৌজন্য সাক্ষাতে আলোচনায় উঠে এসেছে দ্বিপাক্ষিক নিরাপত্তা সম্পর্ক, প্রশিক্ষণ বিনিময় এবং শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে অভিজ্ঞতা ভাগাভাগির বিষয়।
শুধু কুশল বিনিময় নয়, বার্তা ভবিষ্যতের
আইএসপিআর এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, সাক্ষাৎকালে উভয় পক্ষ চলমান বৈশ্বিক নিরাপত্তা পরিস্থিতিতে প্রতিরক্ষা খাতের ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ ও সমন্বয়ের গুরুত্ব তুলে ধরেন।এছাড়া আলোচনা হয়—সামরিক প্রশিক্ষণ বিনিময়, প্রতিরক্ষা উপকরণে প্রযুক্তি সহযোগিতা,আঞ্চলিক নিরাপত্তা চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় অভিজ্ঞতা ভাগাভাগি।
শান্তিরক্ষায় বাংলাদেশের ভূমিকার স্বীকৃতি
জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে বাংলাদেশের নিরবচ্ছিন্ন ও পেশাদার অবদানের জন্য ইন্দোনেশিয়ার উপমন্ত্রী গভীর প্রশংসা করেন।
তাঁর ভাষায়—“বাংলাদেশি শান্তিরক্ষীরা শান্তির প্রতীক। তাঁদের অবদান আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে প্রশংসিত।” বাংলাদেশ বর্তমানে বিশ্বের অন্যতম শীর্ষ শান্তিরক্ষী প্রেরণকারী দেশ। এই প্রেক্ষাপটে ইন্দোনেশিয়ার মতো গুরুত্বপূর্ণ আঞ্চলিক শক্তির এ স্বীকৃতি বাংলাদেশের কূটনৈতিক সাফল্যের অংশ বলেই মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
আঞ্চলিক ও মুসলিম বিশ্বে কৌশলগত সংলাপ
দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বৃহৎ মুসলিম রাষ্ট্র ইন্দোনেশিয়া ও দক্ষিণ এশিয়ার প্রধান মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশ বাংলাদেশ—দুই দেশের মধ্যে সামরিক ও কূটনৈতিক সম্পর্ক ইসলামী সম্মিলন, আঞ্চলিক নিরাপত্তা ও অর্থনৈতিক সম্ভাবনার দিক থেকেও গুরুত্বপূর্ণ। বিশ্লেষকদের মতে, এ ধরনের উচ্চপর্যায়ের যোগাযোগ ভবিষ্যতে সামরিক সহযোগিতা ছাড়াও ইন্দো-প্যাসিফিক কৌশল, সন্ত্রাস দমন ও প্রযুক্তি বিনিময়ের ক্ষেত্রেও ভূমিকা রাখবে।
সৌজন্য সাক্ষাৎ, কিন্তু বার্তাটি স্পষ্ট
যদিও এটি একটি ‘সৌজন্য সাক্ষাৎ’ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে, তবু এতে উঠে এসেছে কৌশলগত অংশীদারিত্বের সম্ভাবনার স্পষ্ট ইঙ্গিত।
বিশেষত রোহিঙ্গা সংকট, জলবায়ু নিরাপত্তা ও সমুদ্রপথে নিরাপত্তা ইস্যুতেও দুই দেশের সামরিক কূটনীতি ভবিষ্যতে আরও সক্রিয় হতে পারে বলে আভাস দিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কূটনৈতিকরা।