মা-বাবা হারানো হতদরিদ্র সখিনা আকতার বিভিন্ন বাসায় গৃহকর্মীর কাজ করে কোনরকম জীবন-যাপন করছেন। অভাব ও কষ্টের সংসারে ভাগ্য বদল করতে ভালো বেতনের আশায় দীর্ঘদিন ধরে চাকরি খোঁজছিলেন। এরই মধ্যে পরিচয় হয় রেহনা নামে এক নারীর সাথে। তিনি ভালো চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে পরিচয় করিয়ে দেন একটি দুস্কৃতকারী চক্রের সাথে। চক্রটি চাকরির দেওয়ার নামে ভুক্তভোগীকে গত ১২ মার্চ সন্ধ্যায় নির্জন জায়গায় নিয়ে ধর্ষণের চেষ্টা করে। ঘটনার দুদিন পর ভুক্তভোগী বাদী হয়ে ৪ জনের নাম উল্লেখ করে চট্টগ্রাম আদালতের মা ও শিশু নির্যাতন ট্রাইব্যুনালে ধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগে মামলা দায়ের করেন। ঘটনার ৪ মাস পার হলেও তদন্ত প্রতিবেদন দিতে পারেনি পুলিশ। ফলে এখনও শুরু হয়নি বিচার কার্যক্রম। এদিকে প্রকাশ্যে ঘুরছে মামলার অভিযুক্তরা।
মঙ্গলবার (২২ আগস্ট) দুপুরে ভুক্তভোগী বলেন, আমার মা-বাবা কেউ নেই। বিয়ে হয়েছিল, স্বামী দুই বিয়ে করায় সংসার ছেড়ে চলে এসেছি। একটি কন্যা সন্তান ছিল, সেও মারা গেছে। বর্তমানে এই দুনিয়ায় আমার কেউ নেই। এই অসহায়ত্বে সুযোগ রেহানার সহযোগিতায় মাহাবুল আলম, মোহাম্মদ শোয়াইব ও ফারুক আমার সর্বনাশ করতে চেয়েছিল।
তিনি আরও বলেন, আদালতে মামলা করার চার মাস পার হলেও পুলিশ তদন্ত প্রতিবেদন দেয়নি। থানা থেকে আমাকে একবার ফোন করেছিল, রাত হওয়ায় আমি যেতে পারিনি। এরপর আর কোনো খোঁজ নেয়নি। আমি অসহায়, কার কাছে গেলে এই বিচার পাবো জানি না। পুলিশ দ্রুত রিপোর্ট দিলে আদালতের কাছে ন্যায্য বিচার পাবো আশা করছি।
মামলার এজাহারে থেকে জানা যায়, গত ১২ মার্চ সন্ধ্যা ৭টার দিকে আসামি রেহেনার সহযোগিতায় মামলার ধারাক্রমে মাহাবুল আলম (৫২), মোহাম্মদ শোয়াইব (৪৮) ও মো: ফারুক (৪০) নগরীর বায়েজিদ বোস্তামী থানার আরেফিন নগর বাংলা বাজারের পাশের এলাকায় একটি নির্জন স্থানে নিয়ে ভুক্তভোগীকে ধর্ষণের চেষ্টা করেন। পরে ভুক্তভোগী চিৎকার করলে চক্রটি পালিয়ে যায়।
চার মাস পার হলেও তদন্ত প্রতিবেদন দিতে না পারায় শঙ্কা প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশ হিউম্যান রাইটস ফাউন্ডেশন বিএইচআরএফ-এর মহাসচিব অ্যাডভোকেট জিয়া হাবীব আহসান।
তিনি বলেন, ভাসমান সাক্ষীরা এক জায়গায় স্থির থাকে না। তাই পুলিশ দ্রুত তদন্ত প্রতিবেদন দিলে অসহায় নারীটি ন্যায় বিচারে সহায়তা করতাম।
বায়েজিদ বোস্তামি থানার অফিসার ইনচার্জ ফেরদৌস জাহান গণমাধ্যমকে বলেন, মামলাটি তদন্তাধীন আছে। ইতোমধ্যে মামলার আইও ঘটনাস্থল পরিদর্শনসহ বাদীর সাথে কথা বলেছেন। আরও যাচাই বাছাই করে শিঘ্রই তদন্ত প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করা হবে।