28.2 C
Chittagong
শনিবার, ২৫ জানুয়ারি ২০২৫
spot_img

― Advertisement ―

spot_img
প্রচ্ছদজাতীয়চট্টগ্রামে বৃষ্টির পর ‘আগুন’ কাঁচাবাজারে

‘উর্ধ্বগতি ঠেকাতে অভিযান চলবে’

চট্টগ্রামে বৃষ্টির পর ‘আগুন’ কাঁচাবাজারে

সুসংবাদ ডেস্ক:

চট্টগ্রামে সম্প্রতি ভারি বর্ষণ ও বন্যার প্রভাব পড়েছে মাছ, মাংস, ও সবজির বাজারে। গত সপ্তাহের চেয়ে বেড়েছে বেশীর ভাগ সবজিসহ মাছ মাংস ও ডিমের দাম। কোন কোন কোনটিতে কেজিতে বেড়েছে ৩০ থেকে ৭০ টাকা। দাম বাড়ায় ক্ষুদ্ধ ক্রেতারা। কারসাজি ঠেকাতে অভিযান চালানোর ঘোষণা দিয়েছেন জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর।

গতকাল শুক্রবার (১১ আগস্ট) সন্ধ্যায় সরেজমিনে নগরীর বহদ্দারহাট কাঁচা বাজারে ঘুরে দেখা যায়, গত সপ্তাহের চেয়ে বেড়েছে প্রায় প্রতিটি পণ্যের দাম। ডিম ডজনে ২০ টাকা বেড়ে বর্তমানে ১৭০, ব্রয়লার মুরগী ২০ টাকা বেড়ে ১৮০-১৯০ টাকা। তদ্রুপ ২০ টাকা করে কেজিতে বেড়ে সোনালী মুরগী বিক্রি হচ্ছে ২২০-২৩০ টাকা, দেশী মুরগী-৬০০-৬৫০ টাকা। অন্যদিকে গত সপ্তাহের চেয়ে গরুর মাংসের দামও বেড়েছে কেজিতে ৫০ টাকা যা বর্তমানে হাড় ছাড়া ৯৫০ টাকা এবং হাড়সহ ৮৫০ টাকা।

মাংসের পাশাপাশি কয়েকটি ছাড়া বেড়েছে বেশিরভাগ মাছের দাম। গত সপ্তাহের চেয়ে রুই(৪৫০) ও কাতাল মাছের দাম কেজিতে ৫০ টাকা কমলেও কেজিতে ৩০ থেকে ১০০ টাকা বেড়েছে অন্যান্য সব মাছের দাম। বর্তমানে প্রতি কেজি লইট্টা বিক্রি হচ্ছে ২৫০, বাইলে-৪০০ চিংড়ি (ছোট)-৪০০, কেছকি-৪০০, পাবদা ৫২০, কোরাল-৪৫০ তেলাপিয়া-৩০০,বড় আকারের ইলিশ কেজি প্রতি ১৪শ, মাঝারী আকারের ইলিশ-৯০০ ছোট আকারের ইলিশ-৬০০ টাকা।

সবজির বাজোরেও কয়েকটি ছাড়া বেড়েছে বেশিরভাগ সবজির দাম। যেখানে গত সপ্তাহের তুলনায় ৪০ টাকা বেড়ে বর্তমানে কাঁচা মরিচ কেজিতে বিক্রি হচ্ছে ২৪০ টাকা। তেমনিভাবে গাজর ২০ টাকা বেড়ে ১২০ টাকা,বরবটি ৩০ টাকা বেড়ে ১০০ টাকা, ২০ টাকা বেড়ে তিতাকরলা কেজি ৯০, উস্তা-২০ টাকা বেড়ে-১০০, চিচিঙ্গা-৫০ ও পটল-৫০ টাকা অর্থাৎ অপরিবর্তিত থাকলেও বেড়েছে কাকরোল, পেঁপে ও শশার দাম।

এদিকে গত সপ্তাহের চেয়ে সয়াবিনের দাম লিটার প্রতি কমলেও বেড়েছে পেয়াঁজ, রসুন, আদা, ডালসহ বিভিন্ন নিত্যপ্রয়োজনী পণ্যের দাম।

শুধু বহদ্দারহাট কাঁচা বাজার নয়, কাজির দেউরি বাজার, চকবাজারসহ নগরীর বিভিন্ন বাজারেও বেড়েছে মাছ, মাংস, সবজিসহ বিভিন্ন পণ্যের দাম। কোথাও একই আবার কোথাও আরো বেশী।

বাজার করতে আসা গৃহবধূ নাফিসা হক বলেন, বাজারে যতবাব আসি ততবারই দাম বাড়ে। আগে যেখানে ২কেজি কিনতাম এখন সেখানে ১ কেজি কিনতে হয়, না হয় আয়ের সাথে ব্যয় মিলাতে পারি না।

স্কুল শিক্ষক আজিজুর রহমান বলেন, শিক্ষকতা করে যা পায় তা দিয়ে পরিবারের জন্য বাজার করতে চলে যায়। অন্যান্য খরচ মেটাতে প্রতিনিয়ত হিমশিম খাচ্ছি। দিনদিন প্রতিটি পণ্যের দাম বাড়ছে আর বাড়ছে। আগামীতে কেমনে চলবো বুঝতে পারছিনা, সংশ্লিষ্টরা বাজার তদারকি না করলে না খেয়ে চলতে হবে।

মাছ বিক্রেতা আজাদ বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে বৃষ্টি ও নদীতে সংকেত চলার জন্য বেড়েছে মাছের দাম। দাম বাড়ায় বেচা-বিক্রি কমছে বলেও জানান তিনি।

বর্ষা ও পর্যাপ্ত সরবরাহের জন্য দাম বেড়েছে বলে দাবি করেন মুরগী বিক্রেতা আবদুল হালিম। তিনি দেশ বর্তমানকে বলেন, মুরগীর দাম গত সপ্তাহের চেয়ে প্রতি ধরণের মুরগীতে ২০ থেকে ৩০ টাকা কেজিতে বেড়েছে।

কনজুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ(ক্যাব) এর সহ-সভাপতি নাজের হোসাইন ক্ষোভ জানিয়ে বলেন, সরকারি তদারকি না থাকায় ব্যবসায়ীরা ফ্রি স্টাইলে ব্যবসা করছে। যখন ইচ্ছা দাম বাড়াচ্ছে আর যখন ইচ্ছা দাম কমাচ্ছে। মধ্যেখানে দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতিতে ভোক্তারা পিষ্ট। ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিলে অস্থিরতা তৈরী করবে ব্যবসায়ীরা বাণিজ্যমন্ত্রীর কথা উদ্ধিৃত কওে বলেন যেখানে মন্ত্রী কিংবা সরকার ব্যবসায়ীদেও কাছে অসহায় সেখানে আমাদের কপালে দু:খ ছাড়া কিছুই নেই। এর আগে ভোক্তা অধিকারসহ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সংস্থার কাছে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কারসাজি ধরা পড়লেও সরকার কোন ব্যবস্থা নিতে পারেনি বরং তদারকি সংস্থার কর্তাদের ডিমোশন করেছেন।

তিনি সংশ্লিষ্ট দপ্তরের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেন, ভোক্তারা যেন ন্যায্য মূল্যে কিনে খেতে পারে সেই জন্য শীঘ্রই ব্যবস্থা নিতে, না হয় নিম্নবিত্ত ও মধ্যবিত্তদের জীবন চালাতে বেশ অসহায় হয়ে পড়বে।

দ্রব্যেমূল্যের উর্ধ্বগতির সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে শীঘ্রই অভিযানে চালানোর কথা জানান, জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর চট্টগ্রাম বিভাগীয় কার্যালয়ের উপ-পরিচালক মো. ফয়েজ উল্যাহ। তিনি বলেন, বিষয়টি আমাদের পর্যবেক্ষণে আছে, যারাই পণ্যের দাম বাড়ার কারসাজিতে যুক্ত তাদের বিরুদ্ধে অভিযান চালিয়ে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। ক্রেডিট: দৈনিক দেশ বর্তমান