চতুর্থ গণবিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষক নিয়োগের ধীর প্রক্রিয়া এবং রিট জটিলতা কাটিয়ে এ সপ্তাহে চূড়ান্ত ফল প্রকাশিত হতে যাচ্ছে। ভেরিফিকেশন শেষে যোগ্য ২৮ হাজার প্রার্থীর চূড়ান্ত নিয়োগ সুপারিশ করতে চায় বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষ (এনটিআরসি)। এ লক্ষ্যে চলতি সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবসে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অনুমতি চাইবে প্রতিষ্ঠানটি। এতে ফল প্রকাশে আর কোনো বাধা থাকবে না।
ফল প্রকাশের সব কার্যক্রম সম্পন্ন করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন এনটিআরসিএ কর্মকর্তারা।
এর আগে ধাপে ধাপে অনলাইন ভেরিফিকেশনসহ জাল সনদ শনাক্তকরণে নিয়োগ প্রক্রিয়ায় ধীরগতি দেখা দেয়। সব শেষ প্রাথমিক সুপারিশপ্রাপ্ত একজন হিন্দু ধর্মাবলম্বী প্রার্থী মাদরাসায় সুপারিশপ্রাপ্ত হওয়ার কারণে রিট করেন। এতে নিয়োগ জটিলতা দেখা দেয়।
রিট ও নিয়োগ নিয়ে জারি হওয়া রুল অনুযায়ী ওই প্রার্থীর নিয়োগ ছাড়া বাকি নিয়োগ কার্যক্রম পরিচালনা করা যাবে বলে এনটিআরসিএকে জানান অ্যাটর্নি জেনারেল কার্যালয়ের কর্মকর্তা। এতে নিয়োগ কার্যক্রমে পুনরায় গতি ফেরে।
এনটিআরসিএর সচিব ওবায়দুর রহমান বলেন, ‘চতুর্থ গণবিজ্ঞপ্তির চূড়ান্ত ফল প্রকাশের বিষয়ে অনেক অগ্রগতি হয়েছে। রিট জটিলতা নিয়ে আইন মন্ত্রণালয়ের ইতিবাচক সাড়া পেয়েছি।
এখন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অনুমতি পেলে নিয়োগ সুপারিশে আর কোনো বাধা থাকবে না। ফল প্রকাশে রবিবার (আগামীকাল) শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে অনুমতি চাওয়া হবে।’
চতুর্থ গণবিজ্ঞপ্তি প্রত্যাশী শিক্ষক ফোরামের সহসভাপতি ইমরান খান বলেন, ‘শিক্ষক হওয়ার দীর্ঘদিনের লালিত স্বপ্ন বুকে নিয়ে চরম হতাশায় দিন পার করছেন প্রাথমিক সুপারিশপ্রাপ্ত হবু শিক্ষকরা। বর্তমানে দেশের কমবেশি সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষকসংকট রয়েছে। বিপুলসংখ্যক শিক্ষকসংকটের কারণে পাঠদান চরমভাবে ব্যাহত হচ্ছে।
শিক্ষকসংকট দূর করে এবং মানসম্মত শিক্ষাব্যবস্থা পরিচালনা করার লক্ষ্যে অতি দ্রুত চূড়ান্ত সুপারিশের ফল প্রকাশের অনুরোধ করছি।’
চতুর্থ গণবিজ্ঞপ্তিতে নিয়োগের প্রাথমিক সুপারিশপ্রাপ্ত প্রার্থীরা জানান, স্কুল-কলেজে শিক্ষক সংকট থাকায় স্বাভাবিক শিক্ষা কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। দীর্ঘদিন ধরে শিক্ষকসংকট থাকায় শিক্ষাব্যবস্থার ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। এ ছাড়া চূড়ান্ত সুপারিশ না হওয়ায় মানসিক হতাশায় ভুগছেন চাকরিপ্রার্থীরা। ফলে পারিবারিক, সামাজিক ও অর্থনৈতিকভাবে ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন তাঁরা।
সবচেয়ে বঞ্চিত ১৬তম নিবন্ধনধারীরা
নিয়োগ কার্যক্রমে চার বছর পার করে পাঁচ বছরে পা দিয়েছেন ১৬তম নিবন্ধনধারীরা। ২০১৯ সালের ২৩ মে ১৬তম নিবন্ধনের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে এনটিআরসিএ। সে বছরের ৩০ আগস্ট অনুষ্ঠিত প্রিলিমিনারি পরীক্ষার পর ফল প্রকাশ করা হয় ৩০ সেপ্টেম্বর। ১৫ ও ১৬ নভেম্বর লিখিত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়ে ফল প্রকাশ করা হয় এক বছর পর ২০২০ সালের ১১ নভেম্বর। এরপর ২ ডিসেম্বর থেকে মৌখিক পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়ে ফল প্রকাশ করা হয় ২০২১ সালের ১৭ অক্টোবর।
অন্যদিকে ২০২২ সালের ডিসেম্বরে চতুর্থ গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে এনটিআরসিএ। এ বছরের ১২ মার্চ ৩২ হাজার ৪৩৮ জন প্রার্থীকে প্রাথমিকভাবে সুপারিশ করা হয়। ধাপে ধাপে এসব প্রার্থীর অনলাইনে পুলিশ ভেরিফিকেশন শেষে চূড়ান্ত সুপারিশের যোগ্য ২৮ হাজার প্রার্থী নির্বাচন করে এনটিআরসিএ।